গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে কি তৃণমূল প্রার্থীদের হারতে হয়েছে সেই সমীক্ষা শুরু করেছে তৃণমূলের ভোটকুশলীরা।

0
365

এগরা, নিজস্ব সংবাদদাতা:- পুরভোটের শুরুতেই প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলকে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল। বিতর্কিত সেই প্রার্থীদের কেউ একা লড়াই করে জোড়া ফুলের মান রক্ষা করেছেন। আবার যাঁরা দলের কাছে গুডবয় ছিলেন সেই প্রার্থীরা পদ্মপ্রার্থী বা তৃণমূলের কাছে হেরেছেন। গত বারের তুলনায় এবার খারাপ ফলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি তৃণমূল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে কি তৃণমূল প্রার্থীদের হারতে হয়েছে সেই সমীক্ষা শুরু করেছে তৃণমূলের ভোটকুশলীরা। পাশপাশি পুরবোর্ড গঠন করতে পারলে কে পুরপ্রধান হবেন তা ঠিক করতে বিভিন্ন সূত্র ধরে ইতিমধ্যেই ভোটকুশলীরা জয়ী তৃণমূল নেতাদের কর্মকাণ্ডের তথ্য জোগাড় শুরু করে দিয়েছে।
জেলার সবচেয়ে ছোট পুরসভা শুরু হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা পৌরসভার পৌর নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর হয়েছে তৃণমূলের। শান্তির ভোটে সেই রাজনৈতিক সৌহার্দ্য অক্ষুণ্ণ ছিল এগরা পুরসভায়। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটে পুরনাগরিকরা তাঁদের পছন্দের গোপাল পাত্র প্রার্থীদের কাউন্সিলর হিসেবে মনোনীত করেছেন। তবে পুরবোর্ড গঠনে তৃণমূল ও বিজেপি কোনও পক্ষই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পারেনি। বিজেপি ও নির্দল প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করার আগেই তৃণমূলকে ৭ জন কাউন্সিলর নিয়ে থামতে হয়েছে। বিজেপির হাতে রয়েছে দলের ৫ কাউন্সিলর। তবে পুরবোর্ড গঠনের আগে ফের শাসকদলের অন্দরে অন্তর্ঘাতের আঁচ পেতে শুরু করেছেন দলের ভোটকুশলীরা। জয়ী আসনেও পিছিয়ে থাকার কারণ খুঁজতে নেমে পড়েছে তারা। সূত্রের খবর হারের পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও অন্তর্ঘাতের বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। পরাজিত ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের নেতৃত্বের সম্পর্কে ভোটের সময় তাদের ভূমিকা সহ একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখছে ভোটকুশলীরা। বিভিন্ন সূত্র মারফত এগরা শহর তৃণমূলের নেতৃত্ব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজও,২০১৫ সালে পুরভোটে নিজের ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থীর কাছে হেরেছিলেন বিদায়ী পুরপ্রধান স্বপন নায়ক। পরবর্তীতে নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। সেই ওয়ার্ডে এই বার তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন সৌভিক
নায়ক। প্রাক্তন কাউন্সিলর তথ্য সেই তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে তৃণমূল নেতা রামচন্দ্র পন্ডা টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে তৃণমূলকে হারিয়েছেন। অপরদিকে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে থেকে ছ’শোর বেশি ভোটে জিতেছেন স্বপন। এক সময়ের পুরপ্রধান স্বপন পুরপ্রশাসক হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন। পাঁচ বছর শহর তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক মহলের মতে প্রবীণ নেতা হিসাবে পুরপ্রধানের দৌড়ে অনেকটাই দাবিদার তিনি। তবে একই সঙ্গে তিনি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হওয়ার কতটা, তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরেও কেন সেখানে তৃণমূলের হার হল নির্দলের কাছে, সেখানে তাঁর ভূমিকা কী ছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে দলের ভোটকুশলীদের তরফে।১২ নম্বর ওয়ার্ডে যে প্রার্থীকে ঘিরে দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ হয়েছিল দলের একাংশ তাঁর কোনও খামতি নেই।” সমর্থনে ভোট প্রচারে বিমুখ ছিল। সেই ওয়ার্ডে একাধিক তৃণমূল নেতৃত্ব নিষ্ক্রিয় থাকার পরেও একক লড়াইয়ে যে ভাবে দলের জয় ছিনিয়ে এনেছেন তৃণমূল প্রার্থী জয়ন্ত সাহু তাও নজরে সময় রয়েছে ভোটকুশলীদের।পুরসভা দখলের লড়াইয়ে কেন পিছিয়ে পড়ল তৃণমূল। হারের পিছনে দলের কাদের ভূমিকা কতখানি গঠন করব।”ভোটকুশলীরা। বোর্ড গঠন হলে জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে কারা সেই পুরপ্রধান নির্বাচনের তালিকায় থাকবেন সেটাও যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তৃণমূলের হয়ে এই কর্মকান্ডে জেলায় ভোটকুশলীদের এক প্রতিনিধি জানান, তৃণমূল প্রার্থীদের হারের পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নাকি অন্য কারণ রয়েছে সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হারের পিছনে কারা রয়েছে সেটাও খোঁজা হচ্ছে। এলাকায় কোন নেতার গ্রহণযোগ্যতা,শহর তৃণমূল সভাপতি উত্তম দাস বলেন, “প্রথমে সমস্যা থাকলেও রাজ্য নেতৃত্বের নির্দিশের পরে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুরভোটে লড়াই করেছি। হয়তো কিছু জায়গায় আমরা হেরেছি। তবে এখানে দলের লড়াইয়ে প্রাক্তন পুরপ্রশাসক তথা তৃণমূলের কাউন্সিলর স্বপন নায়ক জানান ‘নির্দল কাউন্সিলর রামচন্দ্র সারা বছর মানুষের কাজ করে। ভোটের সেখানে আমাদের সংগঠন কিছুটা নড়বড়ে ছিল। তাই মানুষ ভরসা করে নির্দলকে জয়ী করেছে। দলের সিদ্ধান্ত মেনেই পুরবোর্ড আমরাই।