একদল যুবকের উদ্যোগে জঙ্গলের মাঝে ইকো জিম।

0
215

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী থেকে বিষ্ণুপুর মাওয়ার রাস্তার দুপাশে চোখে ধরা পড়বে সবুজ বনানী,সারি সারি শাল পলাশ শিমুল দিয়ে ঘেরা এই জঙ্গল। আধুনিক যুগে নবীন প্রজন্মের কাছে শরীরচর্চা একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ যেখানে সেখানে শরীরচর্চা করার মতন উপযুক্ত কোন স্থান না থাকাতে বাঁকুড়া সোনামুখীর বলরামপুরের একদল যুবকেরা জঙ্গলের মধ্যে তৈরি করে ফেলেছে ইকো জিম। না এই জিম কোন আধুনিক সাজ সরঞ্জাম দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে তৈরি করা তৈরি করা নয়,এখানে ব্যবহার্য প্রত্যেকটা যন্ত্রপাতি দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃিত জিনিস দিয়েই তৈরি। আধুনিকতার এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে থেকেও কেন এই ধরনের অভিনব উদ্যোগ একটা তো প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে? এর সাময়িক উত্তর বলতে বলরামপুর গ্রাম থেকে বিষ্ণুপুর মহকুমা শহরের দূরত্ব প্রায় ১৭ কিমি এবং সোনামুখী শহরের দূরত্বও প্রায় ১১ কিমি। সময় এবং খরচ এই দুয়ের গেরো থেকে মুক্তি পেতেই নিজেদের উদ্যোগে হয়েছে জঙ্গলের মাঝে তৈরি হয়েছে এই ইকো জিম।

এই জিমে রয়েছে বারবেল থেকে শুরু করে চিলিংবার,ওয়েট লিফটিং,ড্রাম্বেল সহ নানান শরীরচর্চার সরঞ্জাম।বিষ্ণুপুর থেকে সোনামুখী যাবার পথে দুদিকই সবুজ বনানীতে ঢাকা এরই মাঝে অবস্থিত বলরামপুর গ্রাম। এই জঙ্গলে বছরভর লেগে থাকে বুনো হাতিদের আগমন,তাই তাদের পারাপারের জন্য তৈরি হয়েছে করিডোর, ঠিক এরই মাঝখানে কয়েকটা গাছে সাদা দাগ করা, পরিষ্কার একটা ফাঁকা জায়গা যা রাস্তা পারাপারকারি সব ব্যাক্তির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বাধ্য। এরই মাঝে তৈরি ৫০০ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে এই ইকো জিম। অনেক যুবক শরীরচর্চার পাশাপাশি সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছে তার জন্য তৈরি হয়েছে ৪০০ মিটারের একটি রানিং ট্র‍্যাক। একটি আধুনিক জিম তৈরি কমপক্ষে যেখানে সাত থেকে আট লক্ষ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ সেখানে নিজেদের ঘরোয়া ব্যবহৃত সাজ-সরঞ্জাম দিয়ে ইকো সিম তৈরি করে কার্যত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বলরামপুরের যুবকেরা।

শুধাংশু গরাই নামে স্থানীয় এক যুবক জানান, অনেক ছেলে পড়াশুনোর গণ্ডি শেষ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে তাদের এর জন্য শারীরিক ফিটনেসের প্রয়োজন তাই প্রাকৃতিক এই পরিবেশকেই তারা বেছে নিয়েছি শরীর চর্চার জন্য, এই এলাকাতে হাতির উপদ্রবের কারনে একবার তাদের সব সাজসরঞ্জাম ভেঙে গিয়েছিল তাও তারা আবার পুনরায় সব সাজিয়ে এটা শুরু করে।
তপন গরাই নামে আরেক স্থানীয় যুবক জানান, এই প্রাকৃতিক পরিবেশে শরীরচর্চা করলে শরীর এবং মন দুই ভালো থাকে তাই বিশেষ করে তাদের এই উদ্যেগ।

লাল মাটির বাঁকুড়ার এই প্রান্তিক গ্রামে নেই শহুরে ব্যাস্ততা,নেই কোনো কোলাহল আর নেই আধুনিকতার ছোঁয়া তারই মাঝখানে একদল তাজা প্রান যেন তাদের স্বপ্নপূরনের লক্ষ্যে অবিচল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here