স্ত্রী’র অধিকার জানাতে এসে মালদা শহরের স্বনামধন্য এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে পুত্রবধূকে মারধর এবং তাঁর নাবালক ছেলে সহ ঘর বন্ধ করে রাখার অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে।

0
208

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:- স্ত্রী’র অধিকার জানাতে এসে মালদা শহরের স্বনামধন্য এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে পুত্রবধূকে মারধর এবং তাঁর নাবালক ছেলে সহ ঘর বন্ধ করে রাখার অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই দফায় দফায় মালদা শহরের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন সর্বমঙ্গলাপল্লী এলাকার জনৈক ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে গোলমালের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসতে হয় ইংরেজবাজার থানার বিশাল পুলিশবাহিনীকে। পুলিশের সামনে নিজের অধিকারের দাবিতে ঘরবন্দী ওই গৃহবধূ প্রতিবাদে সোচ্চার হন।
পুলিশের দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা গৃহবধূ নাম সোনম আগরওয়ালা (২৮)। তার এক নাবালক পুত্র সন্তান রয়েছে। মালদা শহরের ৩৪ জাতীয় সড়ক সংলগ্ন সর্বমঙ্গলাপল্লী এলাকার স্বনামধন্য ব্যবসায়ী রতন আগরওয়ালার একমাত্র ছেলে বিকাশ আগারওয়ালার সঙ্গে ২০১২ সালে বিয়ে হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বাসিন্দা সোনম আগরওয়ালের। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই ওই গৃহবধূকে ব্যাপক নির্যাতন চালায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বলে অভিযোগ।
নির্যাতিত গৃহবধূ সোনম আগরওয়ালা জানিয়েছেন, স্বামীকে তার থেকে দূরে রাখার জন্য জোর করে আসামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পিছনে শশুর রতন আগরওয়ালা সহ পরিবারের সদস্যদের মদত রয়েছে। এরপর পুত্রবধূ হিসাবে শ্বশুর বাড়িতে থাকলেও তাকে কয়েক বছর আগে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার বিষয়ে ইংরেজবাজার থানা অভিযোগ দায়ের হওয়ার পাশাপাশি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তিনি নিজের অধিকারের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে থাকার জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন।
মঙ্গলবার সকালে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে আসলে তাকে বেদম মারধর করে শশুর রতন আগরওয়ালা সহ পরিবারের লোকেরা বলে অভিযোগ। এরপর নাবালক সন্তান সহ ওই গৃহবধূকে একটি ঘরে তালা বন্দী করে রাখা হয় । রাস্তার ধারে বারান্দা থেকে নিজেকে বাঁচার জন্য আর্ত চিৎকার করতে থাকে , এমনকি ওই গৃহবধূ নিজের মোবাইল থেকে পুলিশকে ফোন করে সমস্ত ঘটনার কথা জানায় । পরে বিষয়টি জানতে পেরে এলাকায় পৌঁছায় ইংরেজবাজার থানার তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা ।
নির্যাতিত গৃহবধূ সোনম আগরওয়ালার অভিযোগ, তার স্বামীর বর্তমানে গুয়াহাটিতে রয়েছে । সেখানেও তিনি গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানেও গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে তাকে মারধোর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। গোয়াহাটি পুলিশের কাছে এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মালদার শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি নিয়ে এদিন দাবি জানাতে এসে তিনি মারধরের শিকার হন। দীর্ঘক্ষণ তাকে এবং তার নাবালক সন্তানকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। অবশেষে পুলিশ গিয়ে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে।
নির্যাতিতা মহিলার সাফ বক্তব্য, তিনি তার শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবি জানাতে এসেছিলেন এবং সেখানে তিনি থাকবেন।
যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী রতন আগরয়ালা নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, তার পুত্রবধুর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই । ওর নিজে থেকেই অনেক দিন আগে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। এখন হঠাৎ করে শ্বশুর বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করছে। আমরা ওকে এখানে থাকতে দেবো না। যেহেতু ওর স্বামী অর্থাৎ আমার ছেলে এখানে থাকে না , তাই তাকে এখানে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, এই অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে আদালত মামলা চলছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here