মানব সভ্যতার অস্তিতের সঙ্কটে  রোমেন-সিল্কিদের স্বপ্নের ঘরে আজ প্রজন্মহীন অসহায় এক পৃথিবীর ছায়া : সৌগত রাণা কবিয়াল।

    0
    2048

    শহরের বুকে রোমেন ও সিল্কি.. সদ্য ছটফটে দুটো তরুণ, করোনা নামক দৈত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও বছর হলো তারা নিজেদের ভালোবাসাকে সামাজিক বাঁধনে নামকরণ করেছেন… !  উজ্জীবিত একটা ছিমছাম সংসার.. বাকি আট দশটা নব দম্পতির মতোই নিজেদের অস্ত্বিত্বের সুখ খুঁজে পেতে, নিজেদের সংসারে নতুন মুখের প্রত্যাশায় যখন নিজেদের প্রস্তুত করতে ব্যস্ত.. ঠিক তখনই এক অভাগা নিয়তি বাণ এসে এই তরুণ যুগলকে এক ঝটকায় তাদের স্বপ্নের জগৎ থেকে টেনে নামিয়ে দিলো সময়ের কঠিন বাস্তবতায়… ! নিয়মিত চিকিৎসকের এর কাছে চেকাপের পর যখন দুজনেই জানতে পারলেন যে, সন্তান প্রজননে তাদের শারিরীক কোন দৃশ্যত সমস্যা না থাকলেও, দূর্ভাগ্যবশত তারা বারংবার অসফল হচ্ছেন সন্তান ধারণে… ! অজানা এক অদ্ভুত যন্ত্রণায় রোমেন ও সিল্কির জীবনে তখন আধুনিক সভ্যতায় সমাজের প্রাচীণ নিয়মে-আচারের নামে শুরু হলো প্রহসনের তাবিজ-কবচের কপটীয় প্রহসন.. !  এভাবেই দিনে দিনে ক্রমশ হতাশায় ডুবে যেতে থাকলো দুটো প্রেমময় সুস্থ প্রাণের বুকের ভেতর লালায়িত সুন্দর এক আগামীর স্বপ্ন বুনন… !

    আমাদের চেনা শহরে এটা আজকাল হয়তো খুব একটা ভিন্ন ঘটনা নয়… ! প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে এখন এমন অনেক যুগল তাদের স্বপ্নের সন্তান-সুখের আশায় চুপচাপ বসে থাকেন কৃত্রিম প্রজননের চিকিৎসার প্রয়াসে..!
    দেশ-বিদেশের সন্তানহীন দম্পতিদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে ভারতে ক্রমশ ফুলেফেঁপে ওঠা গর্ভ ভাড়া দেয়ার বাণিজ্যে
    ভারতে গর্ভ ভাড়া সহজলভ্য ও খরচ কম হওয়ায় গর্ভ ভাড়া বা সারোগেসি বাণিজ্যের বাজার দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০০০ কোটি টাকার উপরে…!
    ৪৪ বছর আগে কৃত্রিম গর্ভাধান বা ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের (আইভিএফ) যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ভারতে প্রায় ২৫-৩০ হাজারের উপর অনুমোদিত- অ-অনুমোদিত আইভিএফ ক্লিনিকের দিকে স্বপ্ন নিয়ে তাকিয়ে আছে ভারতের প্রায় ২৭ কোটি অসহায় সন্তানহীন দম্পতি….!
    আইভিএফ পদ্ধতিতে স্ত্রী ও পুরুষের ডিম্বাণু ও শুক্রাণু দেহের বাইরে কৃত্রিম পরিবেশে নিষিক্ত করে তা ভিন্ন নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয় ( যদি গর্ভধারণ ইচ্ছুক নারীর গর্ভাশয়ের ত্রুটি থাকে )..!  অথচ বানিজ্যিক লোভে এর যথেচ্ছাচার ব্যবহারের জন্য পেটের দায়ে এই পেশায় আসা সেই নারীদের জীবনও বেশ হুমকির মুখে পড়ে যায়…!
    সম্প্রতি অনেক নারী বন্ধ্যত্বের সমস্যা বাড়ছে…! একজন নারী সংসার জীবনে প্রবেশ করার পর মা হওয়াটাই তার মনের গভীরে সুপ্ত বাসনা…! এ ছাড়া তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি তাদের বংশ রক্ষা করতে তাদের উপর চাপিয়ে দেন সন্তান ধারণ ব্যার্থতার পুরো দায়…! বন্ধ্যত্বের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেক দম্পতি টেস্ট টিউব বেবি নিয়ে থাকেন…!
    সাধারণ যেসব দম্পতির অনেক চেষ্টার পরেও সন্তান নিতে ব্যর্থ হন, তাদের প্রথামিক অবস্থায় ওষুধের মাধমে চিকিৎসা দেয়ার পর সফলতা না পেলে চিকিৎসকরা তখন তাদের টেস্ট টিউবে বেবি নেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যা বর্তমানে পৃথিবীর চিকিৎসা বানিজ্যের একটি বড় অংশ…!


    অনেকেই মনে করেন টেস্ট টিউব বেবির জন্ম হয় টেস্ট টিউবের মধ্যে.. যদিও এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়..! বিশেষজ্ঞদের মতে  টেস্ট টিউব বেবি কৃত্রিম উপায়ে জন্ম দেওয়া কোনো শিশু নয়.. টেস্ট টিউব মূলত  প্রজননের আধুনিক একটি চিকিৎসা পদ্ধতি মাত্র…!
    টেস্ট টিউব বেবির জন্ম হয় মূল্যবান একটি চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে.. কাজেই কৃত্রিম উপায়ে এভাবে সন্তানলাভে সামাজিক ও ধর্মীয় বাধা থাকতে পারে.. কিন্তু টেস্ট টিউব বেবির বিষয়টি মোটেই  তা নয়…! একজন স্বাভাবিক গর্ভধারিণীর জরায়ুতে বেড়ে ওঠা শিশুর জীবনপ্রণালির ও টেস্ট টিউব বেবির জীবন প্রণালি মূলত একই…!
    ১৯৭৮ সালে ২৫ শে জুলাই লন্ডনে জন্ম নেয় প্রথম আইবিএফ বা টেস্টটিউব বেবি লুই ব্রাউন এর জন্মের পর থেকে  ইউরোপীয়ান সোসাইটি অফ হিউম্যান রিপ্রোডাকসন এর মতে এ পর্যন্ত টেষ্টটিউব পদ্ধতিতে জন্ম নিয়েছে প্রায় এ কোটি শিশু..! পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে নিকট ভবিষ্যতে এর সংখ্যা হয়তো প্রায় ৮-১০ গুন দাঁড়াবে..! যদিও ৪৪ বছরের পুরনো এই আইভিএফ পদ্ধতিতে সফলতার হার বর্তমানে মাত্র ৩০ শতাংশ…! ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে আইভিএফ…!


    এ পদ্ধতিতে স্ত্রীর পরিণত ডিম্বাণু ল্যাপারেস্কোপিক পদ্ধতিতে অত্যন্ত সন্তর্পণে বের করে আনা হয়… পরে প্রক্রিয়াজাতকরণের পর ল্যাবে সংরক্ষণ করা হয়…!
    এছাড়া একই পদ্ধতিতে স্বামীর শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়…পরে ল্যাবে বিশেষ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে নিশিক্তকরণের জন্য বেছে নেওয়া হয় সবচেয়ে ভালো জাতের একঝাঁক শুক্রাণুকে…!
    তারপর অসংখ্য সজীব ও অতি ক্রিয়াশীল শুক্রাণুকে ছেড়ে দেওয়া হয় নিষিক্তকরণের লক্ষ্যে রাখা ডিম্বাণুর পেট্রিডিশে…! ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর এই পেট্রিডিশটিকে তারপর সংরক্ষণ করা হয় মাতৃগর্ভের পরিবেশ অনুরূপ একটি ইনকিউবেটরে…! ইনকিউবেটরের মধ্যে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পরই বোঝা যায় নিষিক্তকরণের পর ভ্রূণ সৃষ্টির সফলতা সম্পর্কে…! ভ্রূণ সৃষ্টির পর সেটিকে একটি বিশেষ নলের মাধ্যমে জরায়ুতে সংস্থাপনের জন্য পাঠানো হয়…! জরায়ুতে ভ্রূণ সংস্থাপন সম্পন্ন হওয়ার পরই তা চূড়ান্তভাবে বিকাশ লাভের জন্য এগিয়ে যেতে থাকে এবং সেখান থেকেই জন্ম নেয় বহু কাঙ্ক্ষিত নবজাতক…! কোনো টেস্ট টিউবে এই শিশু বেড়ে ওঠে না…!


    আমাদের আধুনিক সভ্যতায় নির্ভর এই জীবনযাত্রায় নানাবিধ পরিবর্তনসহ অসংক্রামক রোগব্যাধি ও পরিবেশগত পরিবর্তনে এই বন্ধ্যত্বের হার ক্রমশ বাড়ছে..। সারা বিশ্বে এ হার ১৫ থেকে ২৩ শতাংশ..! বর্তমানে নারীর তুলনায় পুরুষের ক্ষেত্রে এ হার ক্রমেই বাড়ছে…!
    নেদারল্যান্ডসের একদল বিজ্ঞানি অবশ্য আশা করছেন যে আগামী দশকের মধ্যেই আসছে কৃত্রিম মাতৃগর্ভ..!
    “কৃত্রিম মাতৃগর্ভ হবে অনেকটা প্লাস্টিকের ব্যাগের মতন…! নির্ধারিত সময়ের আগেই পৃথিবীতে চলে আসে যে শিশু, মায়ের পেট থেকে বের করে তাকে সেই ব্যাগে ঢোকানো হবে…!


    আমরা শহরের বুকে বর্ষার জলে ভিজবো বলে তীর্থের কাকের মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে নিজের ঘাম ঝড়া শরীরে প্রতিদিন প্রত্যাশায় থাকি আগামীর একটা বৃষ্টিস্নাত ভোরের… ! দুপুরের তৃষ্ণার্ত শহর ছোটা মানুষের একটু জলের তেষ্টা মেটাতে সামান্য জলের জন্য খাবারের দোকানগুলোতে অযাচিত অশোভন ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে আজকাল আমাদের আর মন খারাপ হয় না মানবিকতার পচন দেখে… !  সমগ্র পৃথিবীর সাম্রাজ্যবাদী বানিজ্যিক দাপটে শহরের বুকে দুর্দমনীয় চিকিৎসা বিভ্রান্তির কারণে আজকের মধ্যবিত্ত সংসারের খাবারের বাজেটে ক্রমাগত লাল দাগ বাড়ছে… ! মানুষের দুর্দমনীয় অর্থলিপ্সার কারণে পুকুরের জল ইজারা নিয়ে চলছে পুষ্টিকর সবজির উপর রঙ্গিন জলের প্রলেপ… ! পৃথিবীর তাবৎ যুদ্ধের ইতিহাসে আজ এক অঘম যুদ্ধ হয়ে উঠেছে মানুষের সুস্থ বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার..!
    আজ মানব সভ্যতার অস্তিত্বের জন্য বিজ্ঞজনদের সেমিনারের পর সেমিনারে রাজকীয় নেমতন্ন… কফির কাপে গরম চুমুকে আলোচনার আদ্যোপান্ত…” কি করলে, কি হতে পারে ? কি না করলে কি না হতে পারে..?”
    আর প্রতিদিনের সকালে ঘুম থেকে উঠেই ইদানীংকালের জল নিয়ে জলপাত আর বাক্যপাত তো সমসাময়িক এক উল্লেখ্য বিষয়… !

    সমগ্র পৃথিবীর স্থলভাগ এক বিশাল জলরাশির উপর ভেসে আছে..! জোয়ার ভাটায় সাগর- মহাসাগরে জলের কি উত্তাল ঢেউ.. তবুও পানীয় যোগ্য জলের পরিমান বর্তমানে নেমে গিয়ে প্রায় দুই শতাংশের একটু উপরে গিয়ে ঠেকেছে… ! এই পানীয় জলের ৬৯ ভাগ হিমবাহ, ৩০ ভাগ মাটির নিচে, আর বাকি এক ভাগ বৃষ্টির কল্যাণে পেয়ে আধুনিক মানুষ কোনমতো বেঁচেবর্তে আছে… !  ভয়ংকর হলেও সত্যি যে, আগামী ৩০-২৫ বছরের মধ্যে তীব্র জল সংকটের স্বীকার হতে চলেছে পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ মানুষ.. !
    ভারতের মতো কৃষি নির্ভর দেশগুলো নিজেদের পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে ক্রমশ মাটির নিচের জল সব টেনে উপরে নিয়ে আসছে…. ফলাফল স্বরুপ, রাতের ঘুমের মাঝে হঠাৎ হঠাৎ ভুমিকম্পের ভয়ে শহরের মানুষের জল তেষ্টায় গলা শুকিয়ে আসছে..! পরিবেশগত দূষণের কারণে বছর প্রতি ১৭ লক্ষ শিশুর মৃত্যু, বায়ু দূষণের কারণে এজমায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা বানিজ্যকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দিচ্ছে প্রায় ৩৩ মিলিয়ন মানুষের অসহায়ত্ব… !
    মাটির নিচের পানীয় জলে মাত্রারিক্ত আর্সেনিক ভয়ংকর রুপ ধারণ করেছে এই সময়ে.. !
    অধিক মুনাফার বানিজ্যকে টিকিয়ে রাখতে বৈশ্বিক উষ্ণতায় ক্রমশ খাটো হচ্ছে মানুষের শরীর.. ! বিলুপ্তির পথে প্রায় ১৯ হাজারেরও বেশি জৈব জ্বালানী..! শব্দ ও বর্জ দূষণে বিলুপ্তির পথে সাগরের প্রাণীকূল… ! ক্রমাগত ভয়ংকরভাবে ভেঙ্গে পরছে পৃথিবীর হাজারো বছরের প্রাকৃতিক ইকো সিস্টেম… !

    ছেলেবেলায় বাবা মায়ের হাত ধরে যাদুঘরে বেড়াতে গিয়ে মৃত প্রানীদের জীবিত রুপ দেখে মুগ্ধ হতাম যে ফর্মালিনের কল্যাণে.. আজ সেই সময় ফর্মালিনের যাদুকরি ব্যবহারে প্রতিদিন আমাদের বাজারের ব্যাগ হয়ে উঠছে স্লো পয়জার মৃত্যুর আগমনী অভিশাপ… !


    আধুনিক সুখী জীবনের ফাঁদে পরে প্রতিদিন আমরা আবর্জনার এক ভাগারে পরিনতি করছি আমাদের প্রিয় এই জল ও স্থলভূমিকে..! এমনকি অমরত্ব লাভের প্রত্যাশায় মহাকাশেও আমাদের বিরত্বের পাশবিক দূষণ চিহ্ন রেখে দিচ্ছি.. ! ক্রমাগত অপচনশীল আবর্জনায় বাতাসে বিষাক্ত গ্যাসের পরিমান বাড়িয়ে দিচ্ছে আমাদের রঙিন প্লাষ্টিক প্রিতি.. ! পৃথিবীর জলের সবকটা আধারে আজ প্লাস্টিকের দোর্দণ্ড প্রতাপে আমরা ক্রমান্বয়ে নিজেদের জীবনকে বিশাক্ত এক শেকলে আবদ্ধ করে নিচ্ছি..!
    কর্পোরেট বানিজ্যের মিষ্টি কথায় স্কয়ার ফিটের নিউক্লিয়ার সংসারে মোহাবিষ্ট হয়ে আমরা প্রতিদিন সবুজের মাথা কেটে নিয়ে নিজেদের মাথা আকাশের উচ্চতায় নেয়ার এক অসম বাসনায় মেতে উঠেছি.. ! সেই সুখের ঘরের জন্য নির্বিচারে সবুজ কেটে জ্বালানী করে বাতাসে কার্বনের পরিমান বাড়িয়ে দিয়ে তার বিনিময়ে পৃথিবীর ওজন স্তরের বিশাল ছিদ্র করে সূর্যের ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয়তা নিজেদের গায়ে রুপ বর্ধক বানিয়ে নিয়েছি…!
    ঘরে বাইরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত  সুখের জন্য, বিনোদনের নামে অসুস্থ সিরিয়ালের মোহে পরে, আধুনিক সমরাস্ত্র জোগানে নিজেদের বাহুবল দেখাতে গিয়ে বিষাক্ত বাতাস সৃষ্টি করে নিজেরাই আবার দেশে দেশে অক্সিজেন বুথ লাগিয়েছি আর অক্সিজেন মাস্ক পরে নিজেকে আয়নায় দেখে ভিনগ্রহের এলিয়েন ভেবে দুর্দান্ত সুখ পাচ্ছি…!
    সভ্যতার কলঙ্ক গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনে, ফসিল ফিউয়েলের অত্যধিক ব্যবহার, তেল এবং সিমেন্টের উৎপাদনের উর্দ্ধগতির মতোই..! সমগ্র পৃথিবীতে ২০১১ সালে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হয়েছে ৩,৪০০ কোটি মেট্রিক টন এবং মাত্র ১০ বছরে এর মাত্রা বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশেরও বেশী.. !


    বিগত দুই দশকে বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের নির্গমনের হার বেড়েছে প্রতি বছর ২.৭ শতাংশ হারে !  উন্নত দেশগুলো এর জন্য মুখ্য ভূমিকা রাখলেও এখন বিভিন্ন পরিসংখ্যানে উন্নয়নশীল দেশগুলোর দায় চোখে পড়ার মতন.. !
    পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণ যদি এভাবেই বাড়তে থাকে তবে আগামী ২ দশকের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাবে ৩.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট.. ! এর ফলে নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখোমুখি হতে হবে আমাদের প্রিয় পৃথিবীকে.. !  তার মধ্যে আকস্মিক বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, সুনামি, ভূমিকম্প -এর মতো ভয়ংকর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত হয়ে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে পৃথিবীর বাস্তু ব্যবস্থার প্রায় পুরোটাই.. !
    শব্দ দূষণ এ যুগের এক গুরুত্বপূর্ণ জলজ্যান্ত সমস্যা.. !  এর কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলো খুব ধীরে ধীরে দৃষ্টিগোচর হয় বলে মানুষ এর মাহাত্ম্যটা হয়তো সহজে অনুধাবন পারে না.. !
    কোটি বছর পূর্বে পৃথিবীর বুকে সৃষ্ট প্রাণের জন্য প্রকৃতি ও পরিবেশে এক দারুণ ভারসাম্য সৃষ্টি করেছিলেন আমাদের প্রিয় স্রষ্টা.. ! কিন্তু সভ্যতার বিবর্তনে মানুষের আগ্রাসী ভূমিকায় ধীরে ধীরে ভয়ংকর করে তুলেছে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য খোদ তাদেরই নিজেদেরই প্রিয় প্রকৃতিকে.. !
    উন্নত সুখী জীবনের লোভে পড়ে মানুষ আবিষ্কার,পরিশ্রম আর দক্ষতা দিয়ে অর্জন করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগান্তকারী সব জ্ঞান, আর সেই জ্ঞানেই নিজের প্রয়োজন ও রুচি পূরণে নিজেরাই তৈরি করেছে ভয়ংকর বর্তমান পৃথিবীর এই বিকৃত রুপ !
    কথায় বলে, প্রকৃতি ঋণের বোঝা বইতে জানে না, তাই নিঃসংকোচে ফিরিয়ে দেয় মানুষের ভালোবাসা কিংবা অবহেলা দুটোই সমানতালে…!
    হয়তো কিছুটা নিয়মে ফিরলে আজকের রোমেন আর সিল্কিদের মতো তরুণ মুখগুলোকে দিনের পর দিন মানষিক অপূর্ণতার দায় নিয়ে বাঁচতে হবে না.. ! তবে বিকলাঙ্গ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অসহায় আগমনের আগে, মানুষদের নিজেদের বিকলাঙ্গ সুখ ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এক সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে হবে দুর্দমনীয় স্বপ্নবাজের দৃঢ়তা নিয়ে.. !

    ধন্যবাদ ও শুভকামনা..!

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here