সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – শুক্রবার রাত তখন প্রায় সাড়ে নটা। আচমকা একটি বাইক এসে থামলো ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে।এক দম্পতি বাইক থেকে নেমে হন্তদন্ত হয়ে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের কাছে হাজীর হলেন।দম্পতির হাতে থাকা একটি পলিথিনের মধ্যে তখন নড়াচড়া করছে একটি সাপ।দম্পতি চিকিৎসককে জানালেন সাপে কামড় দিয়েছে। জীবন্ত সাপ টি ধরে তারা হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।চিকিৎসক তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু করেন।
জানাগিয়েছে ক্যানিং থানার অন্তর্গত মাতলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে এলাকার ধলীরবাটী গ্রামে।সেখানেই বসবাস করেন বিশ্বজিৎ হালদার।কাজ সেরে বাড়িতে ফিরেছিলেন রাত নটা নাগাদ। দেওয়ালের গায়ে হাত দিতেই তাকে একটি সাপ কামড় দেয়। সাথে সাথে সাপটি কে ধরেও ফেলেন।স্ত্রীকে সাথে নিয়ে সোজা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আসে চিকিৎসার জন্য।
বিশ্বজিত হালদার জানিয়েছেন ‘সাপটি মেরে ফেলা যেতো। কিন্তু পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সাপ কে বাঁচিয়ে রাখা জরুরী। সেই কারণে সাপটি ধরে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম।পাশাপাশি কি সাপে কামড় দিয়েছে তা চিকিৎসকরা বুঝতে পারলে চিকিৎসার সুবিধার হবে। পরে অবশ্য সাপটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্প বিশেষঞ্জ চিকিৎসক সমরেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছে ‘মূলত যে সাপটি শুক্রবার রাতে আনা হয়েছিল সেই সাপটি ‘ঘরচিতি’। এরা সাধারণত সন্ধ্যার সময় ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরা ফেরা করে খাবার খোঁজে। মুলত পোকামাকড় ও টিকটিকি এদের প্রধান খাদ্য। আবার ঘরচিতির মতো দেখতে কালাজ সাপ। তবে গায়ের রঙ একেবারেই আলাদা। কালাজ সাধারণত ঘরচিতি সাপ কে খাওয়ার জন্য আসে।ইদানিং সাধারণ মানুষ সাপ না চিনতে পেরে ঘরচিতি কে কালাজ বলে মেরে ফেলছেন। ঘরচিতি আমাদের উপকার করে। ঘরের মধ্যে পোকামাকড়,টিকটিকি খেয়ে পরিষ্কার রাখে। যার জন্য ঘরচিতি সাপ কে আবার ‘ঘরগিন্নি’ বলা হয়।তাছাড়াও পরিবেশ রক্ষার্থে সাপ কে বাঁচিয়ে রাখা জরুরী’।