অঞ্চল সভাপতি দলত্যাগ ইস্যুতে ক্রমশ জোরালো হচ্ছে শাসকদলের অন্দরের সংঘাত।

0
163

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ-অঞ্চল সভাপতি দলত্যাগ ইস্যুতে ক্রমশ জোরালো হচ্ছে শাসকদলের অন্দরের সংঘাত।ফের নাটকীয় মোড় ঘটনায়।নতুন করে ব্লক সভাপতিদের সাংবাদিক সম্মেলন কে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তরজা। প্রকট হচ্ছে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তীব্র খোঁচা বিজেপির। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের তুলসীহাটার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মনোজ রামের দল ত্যাগকে কেন্দ্র করে বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না শাসকদলকে। একই ব্লকের দুই বিধানসভার বিধায়কের অনুগামীদের মধ্যে তীব্র হচ্ছে সংঘাত। এই দিন হরিশ্চন্দ্রপুর ১(বি) নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস, মহিলা তৃণমূলের সভাপতি সুজাতা সাহা, যুব তৃণমূলের সভাপতি শেখর সাহা, আই-এন-টিটি-ইউসির সভাপতি আব্বাস আলী এই ইস্যুতে বৃহস্পতিবার বৈঠক এবং সাংবাদিক সম্মেলন করে বিধায়ক নিহার রঞ্জন ঘোষের পাশে দাঁড়ান। মনোজ রামের করা সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। বিধায়ককে কুৎসিত আক্রমণের প্রতিবাদ করেন। টাকার বিনিময়ে পদ বন্টনের অভিযোগ উড়িয়ে দেন। কটাক্ষ করেন মনোজ রাম কে। মনোজ রামকে দলে ফেরানোর জন্য জেলা নেতৃত্বের বাড়িতে যাওয়ার কথাও তারা জানেন না বলে জানিয়েছেন ব্লক সভাপতি মানিক দাস। যদিও তার দলে ফেরার বিষয় নিয়ে মত পোষণ করতে চাননি তারা। উচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত বলে এড়িয়ে গেছেন। আর এই ঘটনায় ফের তীব্র হয়েছে শাসক শিবিরের মতানৈক্য। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা এবং চাঁচল বিধানসভার বিধায়কের অনুগামীদের মধ্যে স্পষ্ট হয়েছে সংঘাত। ব্লক সভাপতিদের এই সাংবাদিক সম্মেলনকে পাল্টা তীব্র কটাক্ষ করেছে মনোজ রাম। এদিনও তিনি বিধায়কের বিরুদ্ধে করা নিজের অভিযোগে অনড় থেকেছেন। সাথে বিধায়ক এই সব টাকা দিয়ে ভাড়া করে বলাচ্ছে বলে আক্রমণ করেছেন মনোজ রাম।সমগ্র ঘটনা নিয়ে আবারও তীব্র কটাক্ষ বিজেপির। চরমে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানোতোর।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই ফেসবুকে পোস্ট করে এবং জেলা সভাপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দল ছেড়ে ছিলেন মনোজ রাম। বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে পদ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। আর তারপর থেকে শুরু হয়েছে বিতর্ক। দলত্যাগী অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান এলাকার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এদিকে ওই দিনই তার বাড়িতে মানভঞ্জন করতে যান জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান এবং বুলবুল খান। কিন্তু সেই ঘটনা তার অজানা বলে জানান বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। স্বাভাবিক ভাবে অস্বস্তিতে পড়ছে শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব।রাজ্যের এক মাত্র হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকেই দুই জন ব্লক সভাপতি রয়েছে। চাঁচল বিধানসভার অন্তর্গত চারটি এলাকার এক জন এবং হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার অন্তর্গত তিনটি এলাকার একজন।

যদিও জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান ও বুলবুল খানের তরফে কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ব্লক(বি)সভাপতি মানিক দাস বলেন, কয়েক দিন ধরে যে ভাবে আমাদের বিধায়ককে আক্রমণ করা হচ্ছে তার জন্য আজ আমরা বৈঠক এবং সাংবাদিক সম্মেলন করলাম। যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। দলে কে কোন পদ পাবে সেটা ঠিক করেন মমতা ব্যানার্জি। এই দল মমতা ব্যানার্জি এবং অভিষেক ব্যানার্জির নির্দেশে চলে।

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ব্লক(বি) মহিলা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজাতা সাহা বলেন, দলে কে কোন পদ পাবে সেটা ঠিক করেন মমতা ব্যানার্জি। এই দল মমতা ব্যানার্জি এবং অভিষেক ব্যানার্জির নির্দেশে চলে। টাকার বিনিময়ে পদ দেওয়া হয়েছে এটা একদম মিথ্যা কথা। কে কখন দলে থাকবেন বা দল ছেড়ে যাবেন সেটা তার ব্যাপার।

দলত্যাগী মনোজ রাম বলেন, ওরা তো আর নিজেরা এই অভিযোগ স্বীকার করতে পারবে না। বিধায়কের কথাতে ওরা এগুলো বলছে। বিধায়কের টাকা দিয়ে ভাড়া করা লোক।

বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য কিষাণ কেডিয়া বলেন, একদল যাচ্ছে মনোজরামকে দলে ফেরানোর জন্য। আরেকদল তার বিরুদ্ধে সাংবাদিকক সম্মেলন করছে। এটা ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আমাদের কিছু বলার নেই। মানুষ সব দেখছে।

আর কয়েক মাস পরেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে শাসকদলের অভ্যন্তরে তীব্র সংঘাত দেখা দিয়েছে। এই ঘটনা দলে আরো ভাঙ্গন ধরাতে পারে বলে মনে করছে তৃণমূলেরই একাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here