আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ- ভোজন রসিক বাঙালি যেখানেই চরৈবেতিতে যাক প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার সাথে সাথে খাবারের খোঁজ ঠিকই রাখে। আর সেই খাবার যদি মিষ্টি হয় তাহলে তো বলারই নেই।কথিত আছে দশম শতকের শুরুতে ‘কিতাব ঊল তারিখ’ নামে একটি পারসিক বই-এ উল্লেখ পাওয়া যায় একটি বিশেষ পদের নাম যার নাম ‘জুলবিয়া’ তা পরবর্তীতে ভারতে এসে জিলিপী নাম নেয়, যা শুধু বাংলাবাসী নয় সারা ভারতীয়দের মিষ্টান্নের ইতিহাসে অন্যতম প্রিয় সংযোজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জিলিপী এক ভোজনরসিক বাঙালির কাছে একটা অন্যতম সেরা মিষ্টি, পথচলতি মানুষ রাস্তার ধারে যদি দেখতে পায় গরম গরম প্যাঁচানো রসালো একটা জিনিস একবার না চেখে হয়তো মন ভরবে না।
বাঁকুড়া জেলার ছোট্ট একটি জনপদ হলো কেঞ্জাকুড়া,সেখানকার জায়েন্ট জিলিপী ওরফে জাম্বু জিলিপী নাম কেড়েছে সারা বাংলায়। এই জনপদের দোকানগুলিতে গেলেই দেখা মিলবে সমস্ত মিষ্টান্ন কারিগরেরা এই জিলিপী তৈরি করতে ব্যস্ত। বাংলার ভাদু পূজা এবং বিশ্বকর্মা পুজো কে কেন্দ্র করে বাংলার ভাদ্র মাসের ২৭ তারিখ থেকে শুরু আশ্বিন মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত এই জাম্বো জিলিপী প্রস্তুত করা হয়। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে এই জিলিপি ক্রয় করার জন্য বাঁকুড়া জেলা সহ অন্যান্য জেলা থেকে আগত মানুষদের গাড়ির ঢল নেমে যায়। এক মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী আমাদের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে জানান এই জিলিপী পশ্চিমবাংলার গন্ডি ছাড়িয়ে সুদূর আমেরিকাতেও পাড়ি দিয়েছে। এখনো বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ায় বছরের পর বছর প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাদের বাপ ঠাকুরদাদাদের দেখানো পথে এই জিলিপী প্রস্তুত করে আসছে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা।
বাঙালির খাদ্যতালিকায় মিষ্টান্ন যেখানে একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ,সেখানে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার এই জায়েন্ট বা জাম্বু জিলিপী চেখে দেখতে একবার আসবেন নাকি??