রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রাণী পালন প্রশিক্ষণে সুন্দরবন নিবাসী সুমিত আজ সম্পদ কর্মী।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, নিজস্ব সংবাদদাতা:- উত্তরডাঙ্গা, সবুজে ঘেরা লাবনী সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের অন্তর্গত কৃষি অধুষ্যিত জনপদ। এই গ্রামেরই সাধারণ কৃষক পরিবারের সদস্য সুমিত বরণ কর (২৬)। মেধাবী সুমিত স্নাতক উত্তীর্ণ হওয়ার পর দারিদ্রের কারণে আর পড়াশোনা টা চালিয়ে যেতে পারে নি – বাবার সাথে পারিবারিক কৃষি কাজে যুক্ত হয় পরে। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারটির জীবন জীবিকা কৃষির উপরেই নির্ভরশীল। মেধাবী সুমিতের ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন স্ব-নিযুক্তি প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর হওয়ার। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা সঠিক যোগাযোগ। এরই মধ্যে কোবিড এর কারণে পারিবারিক কৃষি কাজও যথেষ্ট ব্যাহত হতে থাকে। এরই মধ্যে গ্রামের এক কৃষক ভাইয়ের কাছ থেকে সুমিত রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের জীবিকা বিকাশ কার্যক্রমের সম্পর্কে অবহিত হন এবং পরিচয় ঘটে ফাউন্ডেশনের কর্মী অনিন্দ্য মন্ডলের সাথে। মূলতঃ অনিন্দ্যর প্রচেষ্টায় সুমিত ১০-দিনের প্রাণী পালনের একটি ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। সৌজন্যে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ও নরেন্দ্রপুর শস্য শ্যামলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র। এর পাশাপাশি সুমিত একাধিক তিন ও সাত দিনের রিফ্রেশার কোর্সের মাধ্যমে প্রাণী পালনের উপর নিজেকে দক্ষ করে তোলেন। প্রাণীর প্রজাতি নির্বাচন, পশু খাদ্য, চিকিৎসা, ফার্ম ব্যবস্থাপনা, জৈব সুরক্ষা সহ প্রাণী পালনের খুঁটিনাটি বিষয়গুলি নিখুঁতভাবে রপ্ত করে ফেলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সুন্দরবনের এই প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কাছে পশু হাসপাতালে গিয়ে প্রাণীর চিকিৎসা অনেকটাই অসম্ভব – কারন সঠিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব। এই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে এগিয়ে আসেন সুমিত। ধীরে ধীরে প্রাণী চিকিৎসায় সুনাম অর্জন করতে থাকেন। পাশাপাশি নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের অভিজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসকদের সাথে হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০ ৪১৯ ৮৮০০ এর মাধ্যমে।

সুমিতের এই পরিষেবায় গ্রামের মানুষ খুঁজে পেয়েছে প্রাণী পালনের নতুন দিশা, কমেছে প্রাণীর মৃত্যুর হার। বর্তমানে সুমিত প্রাণী সেবী হিসেবে মাসে গড়ে ৭০০০/- টাকা থেকে ৮০০০/-টাকা রোজগার করছেন। সুমিত ও তাঁর পরিবার আজ রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের কাছে কৃতজ্ঞ। সুমিতের স্বপ্ন প্রাণী পালনের উপর ডিপ্লোমা কোর্স করে একজন প্রতিষ্ঠিত প্রাণী চিকিৎসক হওয়ার। এভাবেই গ্রাম বাংলার অগণিত যুবক যুবতীর পাশে দাঁড়িয়ে স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *