প্রলাপ : শ্রী ভট্টাচার্য্য।

আজকাল সবকিছু কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে!

তারিখ, দিন কিছুই মনে থাকছে না।
মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছি যেন!
অজানা এক আতঙ্কে প্রহর কাটছে
কাল রাতেও একটা এম্বুলেন্স
তীব্র সংকেত দিয়ে
ছুটে গেল বিদ্যুৎ গতিতে।
চারিদিকে মৃত্যু হাহাকার!

বিকেলে ছাদে গিয়ে দেখি
চার-পাঁচটা, নাম না জানা, সবুজ পাখি
খেলা করছে নিজেদের মত।
আকাশটা কি ভীষন পরিস্কার!
একবুক শ্বাস নিলাম প্রাণভরে।
অনাবিল খুশিতে নেচে উঠল মন।
রামধনু আঁকা ছিল সেদিন!

কারোর বাড়ির টেলিভিশন বাজছে খুব জোরে।
কানে এলো গত চব্বিশ ঘন্টায়
আক্রান্ত আরও তিনশো চব্বিশ!
আবার ভয়।
সবুজ পাখিগুলো কিন্তু তখনও খেলছে।
ওদের পাশেই জুটেছে আরও কটা লাল পাখি।
একই জাতের কিনা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে
অবচেতনে হারিয়ে গেল আর্তনাদ!
সবকিছু কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে……

পাশবালিশটা জাপটে ধরলাম বুকের কাছে!
এম্বুলেন্সের আওয়াজটা কানে বাজছে তখনও!
ঘুম আসছেনা কিছুতেই!
একথা সেকথা ভাবতে গিয়ে মনে পড়ল
“প্রোডিগ্যালিটি অফ রিপ্রোডাকশন।”
জন্মের হার অতিরিক্ত পরিমানে বৃদ্ধি পাওয়া
যার ফল,”স্ট্রাগল ফর এক্সিসটেন্স”
বাড়তি পরিমাণ, মারা গিয়ে,
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে।
তবে কি ডারউইনের মতানুযায়ী,
মানব প্রজাতির মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি!
আর তার জন্যেই এই মৃত্যু মিছিল!

এই কদিনে মানুষের মৃত্যু বাদ দিলে,
প্রকৃতি মা সুস্থ হয়েছেন অনেকটাই।
পরিবেশ দূষণ কমেছে।
নেমে গিয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ণ মাপার কাঁটাও!
বাকি প্রাণীকুলও স্বস্তি পেয়েছে বেশ।
পৃথিবী তো একা মানুষ নিয়ে না!

এটাই কি প্রাকৃতিক ভারসাম্য?
তবে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ!
নাহ!
আর ভাবতে পারছিনা,
সবকিছু কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে………

***সমাপ্ত***

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *