কন্যাদ্বায়গ্রস্ত পিতার পাশে দাঁড়ালো “নতুন প্রজন্ম” নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। 

0
314

নিজস্ব সংবাদদাতা,  মালদাঃ- মেয়ের বিয়ের সাহায্যে দরবার করেও আত্মীয়-পরিজনদের কাছে মেলেনি কোনো সহযোগিতা । কিন্তু বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলেছিলেন পাত্রীর বাবা। আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছিল। হাতে অর্থ না থাকায় মাঝপথেই মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিলেন পুরাতন মালদার মাংসের দোকানের কর্মচারী মনোরঞ্জন দাস । এই অবস্থায় তার পরিবারের পাশে দাঁড়ালো “নতুন প্রজন্ম” নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।  বাজলো ডিজে , মেকাপে সাজানো হলো কনেকে। পাত পুরে  পোলাও , খাসির মাংস সবজি খেলো বর পক্ষ থেকে নিমন্ত্রতরা। ধুমধাম করে সম্পন্ন হলো মনোরঞ্জনবাবুর একমাত্র মেয়ের বিয়ে।

উল্লেখ্য, পুরাতন মালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে বাঁশহাটির  নিবাসী মনোরঞ্জন দাসের  প্রথমা  কন্যা ঝর্না দাশের সঙ্গে  বিয়ে ঠিক হয় নদীয়া জেলার নিবাসী অভিরাম বাড়ুই-এর সঙ্গে। পেশায় মাংসের দোকানের কর্মচারী মনোরঞ্জনবাবুর মেয়ের বিয়ের জন্য দ্বারস্থ হতে হয় আত্মীয় স্বজনদের কাছে। সাধ্যমত সকলে সাহায্যের হাত ও বাড়িয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু বিয়ের দিন এগালে  সবাই হাত গুটিয়ে নেয়। অগত্যা বিয়ে বন্ধ হওয়ার জোগাড়। কোনক্রমে এই খবর গিয়ে পৌঁছায় নতুন প্রজন্ম নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে। যেমনি কথা তেমনি কাজ। সম্পূর্ণ বিয়ের দায়িত্ব নিল ঔই সামাজিক সংগঠন। ঝর্নার আইবুড়ো ভাত থেকে ছাদনাতলা সাজানো  কনের মেকআপ, প্যান্ডেল, ফটোগ্রাফি,  চা,কফি থেকে অতিথিদের পাত পেড়ে খাওয়ানো কোনটাই বাকি নেই, এমনকি মেনু কার্ডে রক্তদানের বার্তা। এই সংগঠনের প্রত্যেকটি সদস্য এক একটি বিষয়ে  পারদর্শী।  কেউ বা ফটোগ্রাফি, কেউ বা নিয়েছেন  জলের দায়িত্ব, কেউবা দই-মিষ্টির। ১৩  ডিসেম্বর শুভবিবাহ, ১৪  ডিসেম্বর  সকালে কনে বিদায়।  এই অভিনব সমাজকর্মে রাজসাক্ষী পুরাতন মালদা সহ নদীয়া থেকে আসা বড়যাত্রী বেশে দুইশত জন অতিথি।

নতুন প্রজন্মের সম্পাদক হারাধন সাহা বলেন, একেবারে বড় দিদির ভূমিকা নিয়ে নিজ হাতে নিজ গৃহে  আইবুড়ো ভাত ,মেহেন্দি পরানো সহ, মেয়ে বিদায়ের দায়িত্ব সামলিয়েছেন  সংগঠনের অন্যতম সদস্যা  কোয়েল ঘোষ। আমরা সবাই মিলে ছোট ছোট দায়িত্ব নিয়ে এইভাবে বিয়ের ব্যবস্থা করেছি।  পাত্রী ঝর্ণা দাস আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন,  আমরা গরীব স্বপ্নেও কোনোদিন ভাবি নি এত সুন্দর ভাবে আমার বিয়ে হতে পারে। নতুন প্রজন্মের দাদা – দিদিদের কথা জীবনে কোনদিন ভুলবো না। এই শুভ কাজে কনেকে আশীর্বাদ করতে বিয়ে বাড়িতে সশরীরে হাজির হন ভারত স্কাউটস্ এন্ড গাইডস্ মালদা জেলা শাখার জেলা রক্তদান শিবির আহ্বায়ক  অনিল কুমার সাহা, মালদা সহযোগিতা সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ, উদীচী মালদার সম্পাদিকা অঞ্জনা মণ্ডল, সেন্ট জন অ্যাম্বুলেন্সের সমাজকর্মী সুরজিৎ মন্ডল প্রমুখ।

ছবি ——— পুরাতন মালদায় গরিব পাত্রীর বিয়ের আয়োজন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here