ফুটেছে খলসি,আসছে মৌমাছি,আশার আলো দেখছেন সুন্দরবনের মৌলেরা।

0
380

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ সুন্দরবন।নদীখাঁড়ি,ম্যানগ্রোভ ঘেরা গহীণ জঙ্গলে বিচরণ করে সুন্দরবনের বিখাত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সহ হরিণ,কুমীর,বন্য শূকর সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী।প্রাণীদের পাশাপাশি রয়েছে আশ্চর্যজনক খলসি ফুল। যা সুন্দরবন ছাড়া বিশ্বের অন্য কোথাও কোন অরণ্যে নেই।এই খলসি ফুলের সুস্বাদু মধু আবার পৃথিবী খ্যাত।এবার সেই খলসি ফুল ফুটতে শুরু করেছে।ভীড় জমাচ্ছে মৌমাছিরাও। গত ২০২০ সালে করোনা আর লকডাউনের জোড়া ফলা বিধ্বস্ত সমগ্র দেশ তথা পৃথিবী।তার জেরে বনদফতর সুন্দরবন জঙ্গলে মধু সংগ্রহের জন্য অনুমতি দেয়নি।করোনা আর লকডাউন কিছুটা স্বাভাবিক হলে ২০২১ এ মধু সংগ্রহের জন্য মৌলেদের অনুমতি দিয়েছিল বনদফতর। কিন্তু একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় আছড়ে পড়েছিল সুন্দরবনের বুকে। তছনছ করে দিয়েছিল সমগ্র সুন্দরবনকে। ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছি খলসি ফুল গাছ।নষ্ট হয়েছিল মৌচাক ও। যারফলে মধু সংগ্রের জন্য বনদফতরের অনুমতি মিললে ও সে ভাবে মধু মেলেনি।
বনদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে গত ২০২১ সালে ৩৫০০ কেজি মধু মিলেছিল।অন্যান্য বছর ১০ থেকে ২০ হাজার কেজি মধু সংগ্রহ হয় সুন্দরবন থেকে।
চলতি বছর প্রাকৃতিক আবহাওয়া অত্যন্ত ভালো। জঙ্গলে খলসি ফুলও ফুটেছে প্রচুর। মৌমাছিদের আনাগোনা বেড়েছে বিগত বছরের ন্যায়। ফলে আশার আলো দেখছেন মৌলে থেকে বনদফতর।তাঁদের আশা চলতি বছর প্রচুর পরিমাণ মধু সংগ্রহণ হবে সুন্দরবন থেকে।
বনদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে আগামী ৯ এপ্রিল থেকে সুন্দরবন জঙ্গলে মৌলেরা প্রবেশ করে মধু সংগ্রহ করতে পারবেন ১৫ মে পর্যন্ত।মূলত মৌলেরা সুন্দরবনের বসিরহাট এবং পাখিরালয় থেকে জঙ্গলে প্রবেশ করবেন। পরে সেখান থেকে জঙ্গলের মধ্যে ৪-৫ জনের এক একটি দলে বিভক্ত হয়ে মধু আহরণ করবে।জানা গিয়েছে প্রাথমিক ভাবে বনদফতর ৬০ টি দল কে মধু সংগ্রহের জন্য অনুমতি দেবে। সেই অনুমতি দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে।চলতি বছর বাঘের আক্রমণে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে। আর সেই কারণে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে মৌলেদের প্রাণ হানির ঘটলে মাথা পিছু ১ লক্ষ টাকা বিমার ব্যবস্থা করেছে বনদফতর।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন জানিয়েছেন ‘৯ এপ্রিল থেকে ১৫ মে পর্যন্ত মৌলেরা জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে পারবেন।সংগৃহিত মধু ২০০ টাকা কেজি প্রতি দরে কিনে নেবে ওয়েষ্ট বেঙ্গল ফরেষ্ট কর্পোরেশন। সেই মধু সংশোধন করে প্যাকেজিং হবে। পরে তা ‘মৌবন’ নামে খোলা বাজারে বিক্রি করবে।
তাঁর দাবী খলসি ফুল ভালো মতো ফুটেছে। ফলে চলতি বছর ১০ হাজার কেজির উপর মধু সংগ্রহ হবে বলে আশা করা যায়।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here