জঙ্গল অধ্যুষিত পাথরি-কলসিভাঙা এলাকাতেই বসল গণবিবাহের আসর।

0
485

পশ্চিম মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- এক সময় যে এলাকায় সন্ধ্যার পর মাও আতঙ্কে গা ছমছম করত, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর সেই পিড়াকাটা সংলগ্ন পাথরি-কলসিভাঙা’তেই সন্ধ্যার পর বসলো গণবিবাহের আসর। আর, সেই আসরে ১১ যে জোড়া পাত্র-পাত্রী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন, তাঁদের মধ্যে আছেন মাও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক সদস্যও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত জঙ্গলমহল এলাকায় রবিবার সন্ধ্যায় বসেছিল গণবিবাহের আসর। শুধু এলাকাবাসী নয়, সমগ্র জেলাবাসীর কাছেই ছিল এ এক অভিনব আয়োজন! দুঃস্থ ও অসহায় পরিবার গুলির অভিভাবক-অভিভাবিকাদের আশ্বস্ত করা কিংবা চোখের জল মোছানোই নয়, প্রান্তিক এলাকায় বাল্যবিবাহ এবং নারী-পাচার রোধ করতেই এই অনন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল আম্মা জনসেবা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির তরফে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন জেলার স্বনামধন্য ব্যবসায়ী, সমাজকর্মী থেকে শুরু করে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। এই গণবিবাহ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) কেম্পা হোন্নাইয়া।

সোসাইটির চেয়ারম্যান প্রবীর মাইতি রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, “‘সকলের তরে সকলে আমরা’- কবির এই চিরন্তন বাণীকে পাথেয় করে অসহায় পরিবার ও পিছিয়ে পড়া সমাজের পাশে দাঁড়াতে আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এর আগে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে আমরা ত্রিবেণী যুবকল্যাণ সংঘের সহযোগী হিসেবে এই মহান কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। তারপর, আমরা জেলার বিশিষ্ট সমাজ সেবীদের সহযোগিতায় এই সুবিশাল কর্মযজ্ঞে নিজেদের অর্পণ করেছি।” তাঁর সংযোজন, “আমাদের যাঁরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকব। তাঁদের মধ্যে কয়কেজনের নাম না বললেই নয়। বিশিষ্ট সমাজসেবী ও ক্রীড়া সংগঠক সুজয় হাজরা, সন্দীপ সিংহ, মৌ রায় থেকে স্বনামধন্য ব্যবসায়ী বজরঙ্গিলাল আগরওয়াল প্রমুখ প্রথম থেকে শেষ অবধি আমাদের পাশে ছিলেন। এছাড়াও, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত, শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিনু কোয়াড়ি, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত (৭নং) প্রধান পরিমল ধল থেকে শুরু করে স্থানীয় অসংখ্য সমাজকর্মীরা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সক্রিয়ভাবে। তাঁরা এই গণবিবাহের আসরে উপস্থিত থেকেও আমাদের ধন্য করেছেন। অপরদিকে, শালবনী টাঁকশাল কর্তৃপক্ষ, ডালমিয়া কর্তৃপক্ষ, রেশমি মেটালিক্স কর্তৃপক্ষ আমাদের সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে, শালবনী থানা, পিড়াকাটা পুলিশ পোস্ট, গুড়গুড়িপাল থানা সহ জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের অবদান অনস্বীকার্য। ভবিষ্যতে তাই আরো বড় কর্মসূচি গ্রহণ করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here