জলের অপর নাম “জীবন”, কিন্তু নোংরা যুক্ত জল ব্যবহার করছেন ৪০টি পরিবার,ক্ষোভ বাড়ছে পাঁশকুড়ার জগৎপুর গ্রামের বাসিন্দাদের।

0
172

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- জলের অপর নাম “জীবন”, কিন্তু নোংরা দূষিত জল ব্যবহার করছে গ্রামের চল্লিশটি পরিবার,পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির জগৎপুর গ্রাম,কাঁসাই নীদীর তীরে গড়ে উঠা এই গামে প্রায় হাজার তিনেক মানুষের বসবাস। হাতে গোনা চাকুরি জিবি মানুষ তবে অধিকাংশই চাষবাস এবং শ্রমিকের জীবন যাপন করেন। জল-ই জিবন, এই শব্দটা তাদের কাছে পরিচিত শব্দ হলেও জিবন ধারনে পরিশুদ্ধ জলের গুরুত্ব তাদের কাছে অচেনা শব্দ। কারন বাধ্যকতা মাথা নিচু করেছে নোংরা জলকেই পরিশুদ্ধ পানিয় হিসেবে ব্যবহার করতে। ওই এলাকার প্রায় ৪০ টি পরিবার দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে পুকুরের জলকে পানিয় জল হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে। এই দৃশ্য শুধু বাংলা নয়, দেশ বাসির কাছে এক অতি জঘন্য চিত্র বলেই মনে করছে সামাজিক মহল। কারন যেখানে নদী ও সাগরের জলকে রক্ষা করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয় আবর্জনা পরিষ্কারের পিছনে সেখানেই কিছু মানুষের প্রধান পানীয় পুকুরের নোংরা জল। এঘটনা আরো একবার প্রমান করে সাধারণের প্রতি সরকারের সজাগ দৃষ্টি ভঙ্গি কতটা উচ্চতর।
কিন্তু কেন এই পরিবার গুলির এরূপ দুরবস্থা?? স্থানীয়দের বক্তব্য পি এইচ ই দপ্তর থেকে ২০১৮ সালে বসানো হয়ে ছিল সাবমারসেবল। এলাকায় পৌছেছিল পাইপ লাইনে করে সেই জল। কিন্তু মাসখানেক জল পড়ার পর সেই কল থেকে পড়ছে না আর জল। এলাকায় থাকা টিউবওয়েলটিও হয়েছে বিকল। ওই এলাকায় নেই পানীয় জলের কোনো ব্যবস্থা। ব্যক্তিগত কিছু বাড়িতে সাবমার্শবেল রয়েছে, ইলেকট্রিক বিল বেশি আশার কারনে তাতেও জল নিতে বাঁধার সৃস্টি হন ওই এলাকা বাসিরা। তাই কার্যত বাধ্য হয়েই পুকুরের জলকে ফুটিয়ে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করছেন পাঁশকুড়া ব্লকের জগৎপুর গ্ৰামের ৪০ টি পরিবার। তাদের দাবী, দীর্ঘদিন ধরেই পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। কল থাকলেও পড়ছে না জল। এলাকায় যদিও একটি টিউবওয়েল রয়েছে সেটিও বিকল। তাই বাধ্য হয়েই তারা জল ফুটিয়েই পুকুরের জলকে পান করছে। একাধিকবার পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধান কে জানিও কোন সুরাহা হয়নি। পুকুরের জল থেকে হতে পারে নানান রোগ, এটা জানা সত্ত্বেও কার্যত বাধ্য হচ্ছেন পুকুরের জীবাণুযুক্ত জল পান করতে। তবে কোন উপায় না পেয়েই পুকুরের জলে পান করছেন দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। কি কারনে জল পাচ্ছে না, কেনই বা তাদেরকে দীর্ঘদিন পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে তা নিয়ে অধরা রয়েছে জগৎপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এই নিয়ে মাইশোরা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাইদা সাবানা বানু খাতুনের দাবী-“জগৎপুর গ্রামে জলের একটা সমস্যা রয়েছে। আমরা পিএইচ এইচ দপ্তর কে এই নিয়ে একাধিকবার চিঠিও দিয়েছি। এলাকায় যে টিউবয়েলটি রয়েছে তার লেয়ার নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে সেটিকে আর সারানো সম্ভব হচ্ছে না। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকেই এই জলের সমস্যা মিটবে এমনটাই প্রতিক্রিয়া মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের। তবে পুকুরের জল খাওয়ার বিষয়টি কোন ভাবেই মানতে চাননি স্বয়ং প্রধান। যদিও সেই চিত্র ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি হানিফ মোহাম্মদ এর দাবি মা মাটি সরকারের আমলে একাধিক উন্নয়ন হয়েছে পাঁশকুড়ার বুকে, তবে জগতপুর এলাকায় কেন এরুপ দুরাবস্থা বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন ওই ব্লকের সহ-সভাপতি। দ্রুত জল সংকটের এই করুণ দুর্দশা থেকে মুক্তির দাবি করেছেন ওই এলাকার চল্লিশটি পরিবার। তবে কত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান মিলবে তা সময়ের অপেক্ষা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here