আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ সেখ ভাইদের গাজন, ব্যাপারটা হয়তো হজম হবে না এ সমাজের অনেকের, ভ্রু কুঁচকে হয়তো আকাশ-পাতাল ভাবতে থাকবেন অনেক মানুষই কিন্তু বাস্তবে কি এ গাজন সেখ ভাইদেরই গাজন।
মনে মনে নিশ্চয়ই সকলেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন আর জানতে চাইছে এরকম অদ্ভুত গাজন কোথায় হয়, এ গাজন হয় বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের গোবিন্দপুরে।
বর্ন ধর্ম নির্বিশেষে গোবিন্দপুরের এই উৎসব আজকের অস্থির সময়ের সম্প্রতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
শেখ ভাইদের গাজন উৎসব এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে এমন এক বৈশিষ্ট্য যা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যবাহী।
ঠাকুরের নিত্যসেবা থেকে শুরু করে গাজন উৎসব, যাবতীয় খরচ বহন করে সেখ ভাইদের বংশধররা।
এবার নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে কেন এমনটা হচ্ছে, তাহলে শুনুন– অনেক কাল আগের কথা, বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের গোবিন্দপুর গ্রামের তিন পূর্বপুরুষ সেখ ইয়াকুব, সেখ ইউসুফ, সেখ এহিয়া তিন ভাই জঙ্গলে পাতা কুড়াতে গিয়েছিল।পাতা কুড়াতে কুড়াতে চোখে পড়ে একটি সুন্দর পাথরের। পাথরটিকে গরুর গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে আসে গ্ৰামে। নিজেদের বাড়িতে ঢোকার আগেই গাড়ি থমকে যায়। সেই রাতে তিন ভাই স্বপ্ল দেখে ঐ পাথর শিব ঠাকুরের রূপ ধারণ করে এসেছে। স্বপ্নাদেশে তাদের এখানে মন্দির প্রতিষ্ঠা করার জন্য বলে।
পরের দিন সকালে ওই তিন ভাই গ্ৰামের পুরোহিতদের ডেকে মন্দির তৈরি করে পাথর রূপী শিব কে প্রতিষ্ঠা করেন মন্দিরে, পরবর্তী সময়ে শেখ ভাইদের বংশধরেরা নিত্য সেবা থেকে গাজন উৎসব এর সমস্ত খরচ খরচা বহন করে আসছেন,যদিও ইদানীংকালে গ্রামবাসীদের আর্থিক সহযোগিতায় পুরানো মন্দির স্থলে নতুন করে নির্মিত হয়েছে শিব মন্দির আর সেই মন্দিরেই ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে গাজন উৎসব।