প্রকাশ্য দিবালোকে তৃণমূল কর্মী কে গুলি করে কুপিয়ে খুন,এলাকায় চাঞ্চল্য,ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ।

0
237

বাসন্তী, নিজস্ব সংবাদদাতা: – প্রকাশ্য দিবালোকে তৃণমূলের এক সক্রীয় কর্মী কে গুলি করে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠলো দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে।
মৃতের নাম জানে আলম গাজী(৩৫)। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার অন্তর্গত ভরতগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর আনন্দাবাদ এলাকায়।আর এমন ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।ঘটনার খবর পেয়ে ক্যানিং মহকুমা পুলিশ আধিকারীক দিবাকর দাসের নেতৃত্বে ক্যানিং ও বাসন্তী থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে হাজীর হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।পরে ঘটনাস্থলে হাজীর হন বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পুষ্পা। তিনি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন।মৃতের পরিবারের সাথে কথা বলেন। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। ঘটনায় আহত হয়েছেন সাদ্দাম হোসেন মোল্লা,রহিম মোল্লা,হান্নান সেখ আবেদ আলি মোল্লা।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে এদিন সকাল প্রায় ১০ টা নাগাদ জানেআলম গাজী তার তালতলা গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভরতগড় বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন রেশন ধরার জন্য।পথে তার সঙ্গে বাজারে যাচ্ছিলেন আরো জনা পাঁচেক তৃণমূল কর্মী সমর্থরা।
বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ যাওয়ার পর আচমকা স্থানীয় মণিরুল মোল্লার নেতৃত্বে তার বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ বেরিয়ে আসে জনা দশেক দুষ্কৃতি।অভিযোগ তারা জানেআলম কে ঘিরে ধরে। পরে তাকে টেনে নিয়ে রাস্তার পাশে গিয়ে গুলি চালায়। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় জানেআলম গাজীর। অপর তৃণমূল কর্মীদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর সুযোগ বুঝে অভিযুক্তরা এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ প্রথমে গুলি করা হয় তারপর তাকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। কিন্তু গুলি করার কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের দাবি ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে জানেআলম কে। আশঙ্কা জনক অবস্থায় ওই যুবককে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে।

প্রত্যক্ষদর্শী আহত তৃণমূল কর্মী সাদ্দাম হোসেন মোল্লা বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ ওরা জানেআলম কে লক্ষ্য রাখছিল। এদিন আমরা যখন বাড়ি থেকে বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম তখনই রাস্তার মাঝখান থেকে জানে আলমকে তুলে নিয়ে যায় মনিরুল মোল্লা,কালাম মোল্লা,জহরুল মোল্লা, সৈদুল মোল্লা,সিদ্দিক কাজীরা।পরে আমাদেরকে মারধর করে। আমরা ভয়ে পালিয়ে যাই। এবং চিৎকার করতে থাকি। যারা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত তারা তৃণমূলের যুব সংগঠন করে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে খুন হওয়া ওই যুবক তৃণমূলের মাদার সংগঠনের কর্মী। গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তাকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিল এলাকার যুব সংগঠনের কর্মীরা। এখন এলাকায় আমরাই মূলত সংগঠনটা করছি আর তাতেই তাদের রাগ হয়েছে আর সেই কারণেই এই খুন।

        তবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানতে নারাজ স্থানীয় বিধায়ক শ্যামল মন্ডল। তিনি বলেন এলাকার কিছু সমস্যার কারণেই দুটো গোষ্ঠীর মধ্যে গন্ডগোল। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। পুলিশকে জানানো হয়েছে, যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে। এবং তাদের যেন গ্রেপ্তারও করা হয় দ্রুত।

        ঘটনার পর ব্যাপক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে ওই এলাকায়। দুষ্কৃতিদের কে ধরতে হবে এই দাবীতে ভরতগড় বাজারে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। পরে অবশ্য পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভ তুলে দেয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদেরও খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। দেহটি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here