নিঝুম রাতে ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষ পালন করলেন আন্তর্জাতিক প্রবীণ নাগরিক দিবস।

0
315

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – নিঃশব্দ বিপ্লব!রবিবার নিঝুম রাতের অন্ধকারে আন্তর্জাতিক প্রবীণ নাগরিক দিবস পালন করলেন ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষ।নিঝুম রাতের অন্ধকারে থানার কাজকর্ম সেরে সঙ্গীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।থানা সংলগ্ন কুমার শা থেকে শুরু করে ক্যানিং রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকায় হাজীর হন সঙ্গী সাথীদের কে নিয়ে।ভবঘুরে থেকে শুরু করে অনেকেই তখন ঘুমে অচেতন।ভারী বুটের শব্দে ঘুম ভাঙতেই জেগে ওঠেন তাঁরা। রাতের অন্ধকারে পুলিশ দেখে ভয়ে জড়োসড়ো অসহায় ফুটপাথবাসীরা।কি জানি কি হয়।ধীর পায়ে এগিয়ে গেলে ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষ ও ক্যানিং থানার এসআই রঞ্জিত চক্রবর্তী।
সেখানে একে একে অসহায় বৃদ্ধাদের হাতে তুলে দিলেন নতুন বস্ত্র।রাতের অন্ধকার এমন মানবিক পুলিশ কর্মী হাত থেকে নতুন বস্ত্র পেয়ে খুশি ক্যানিং স্টেশন চত্বরের বসবাবাস কারী প্রবীণ বৃদ্ধারা।
অন্যদিকে কলকাতা ফেরত নিত্যযাত্রীরা রাতের অন্ধকার পুলিশের এমন মানবিক কাজকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন।বিশেষ করে বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবসে প্রবীণদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। নিত্যরেল যাত্রী সুবল নস্কর,প্রদীপ হালদার,সুকান্ত রাউতদের দাবী পুলিশ যদি মানবিক হয় এবং সঠিক কর্তব্য পালন করেন তাহলে দেশ ও দশের অগ্রগতি কেউ আটকাতে পারবে না।
উল্লেখ্য ১৯৯০ সালে ১৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় এই দিনটির কথা প্রথম ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রসংঘের প্রত্যেকটি সদস্য দেশ এই দিনটি পালন করে থাকে। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০৫০ সালে গোটা বিশ্বে ষাটোর্ধ্ব বা তার বেশি বয়স্ক মানুষের সংখ্যা হবে ২০০ কোটি। যা বিশ্বের সর্বমোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরও বেশি। এই সংখ্যার বিচারে এশিয়া মহাদেশে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ পরিমাণ ।
১৯৮৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগান এই দিনটির সূত্রপাত করেছিলেন ১৯৮৮ সালের ১৯ আগষ্ট তিনি ৫৮৪৭ এর প্রোমালগেশনে স্বাক্ষর করেন।সেই স্বাক্ষরের ভিত্তিতেই ২১ আগষ্ট দিনটি বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।

উল্লেখ্য বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবস উদযাপন করার প্রধান লক্ষ্য বয়স্ক মানুষজনের সামগ্রিক অবস্থার জন্য সচেতনতা গড়ে তোলা এবং তাঁদের বার্ধক্যকালীন সময়ে তাঁদের পাশে থাকা। এর সাথে সমাজের প্রতিটি স্তরে তাঁদের অবদান তথা জ্ঞান ও দক্ষতাকে স্বীকৃতি জানাতে তাঁদের জন্য এই বিশেষ দিনটি নির্দিষ্ট করা হয়।  
প্রতিটি মা বাবা তাঁদের সন্তানদের জন্য যা করে থাকেন, সেই ঋণ কখনোই শোধ করা সম্ভব নয়। আর বাবা মা যখন প্রকৃতির নিয়মে বার্ধক্যের দিকে এগিয়ে যায় তখন সন্তান অন্ততঃ তাঁদের কর্তব্যটুকু পালন করা বাঞ্ছনীয়।বিশেষ করে বয়স্কদের যথাযোগ্য সম্মান করা। বিপদে-আপদে,দুঃসময়ে তাঁদের পাশে থাকা জরুরী। তাঁদের সঙ্গে সময় কাটানো, তাঁদের একা না অনুভব করতে দেওয়ার দায়িত্ব নবীন প্রজন্মের ওপরেই বর্তায়। এই মূল্যবোধকে সবার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতেই ২১ আগস্ট বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবস পালন করা হয়ে থাকে।

যেকোন সাধারণ মানুষের পবিত্র কর্তব্য বয়স্কদের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন বা তাঁদের পাশে থাকা। কোনো বিশেষ দিনে এই সম্মান বা পারস্পরিক নির্ভরতা সীমাবদ্ধ না থাকলেও এই দিনটিকে বিশেষ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার পিছনে জনসচেতনা গড়ে তোলা ছাড়াও অন্য যে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেটি হল সরকারকে বয়স্ক মানুষজনের হিতার্থে উদ্যোগ নিতে বাধ্য করা। সরকার যে বয়স্ক মানুষজনের সার্বিক কল্যাণের প্রতি দায়বদ্ধ এই দিনটি তারই ইঙ্গিতবাহী।

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে নানা পরিবর্তন দেখা দিতে থাকে। শারীরিক সমস্যা যত না জটিলতা সৃষ্টি করে, মানসিক অস্থিরতা, একাকীত্ব এই বয়সী মানুষের নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠে। সেখান থেকে মানসিক অবসাদ এবং অন্যান্য সমস্যা তাঁদের ঘিরে ধরে। এই সময়ে তাঁদের সঙ্গে সময় কাটানো, তাঁদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করা এবং তাঁদের সবরকমভাবে সাহায্য করাই একমাত্র সমাধান। গোটা বিশ্বে এই দিনটি বিভিন্নভাবে পালিত হয়ে থাকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here