ঘূর্ণিঝড় নিয়ে চরম সতর্কবার্তা পুলিশের।

0
1682

সুভাষ চন্দ্র দাশ, সুন্দরবন : — আবার ঘুর্ণিঝড় ও প্রবল বর্ষণ হতে পারে। আবহাওয়া দফতরের আগাম এমন সতর্কবার্তায় নড়েচড়ে বসলো সুন্দরবনের বারুইপুর জেলা পুলিশ প্রশাসন। ইতিমধ্যে শনিবার সকাল থেকে এলাকার সাধারণ মানুষজনদের কে সতর্ক করতে ঝড়খালি কোষ্টাল থানার পুলিশ আধিকারীক প্রদীপ কুমার রায়ের নেতৃত্ব এলাকায় চলছে মাইকিং করে সতর্কতা করার কাজ। আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের গভীরে একটি ঘূর্ণাবর্তার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ৮ আগষ্ট ঘূর্ণাবর্তাটি গভীর নিন্মচাপে পরিণত হয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।চলবে ১১ আগষ্ট পর্যন্ত। সঙ্গে বজ্রপাত সহ প্রবল বৃষ্টিপাত এবং ঘন্টায় ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।পরে আবার ঘুর্ণি ঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে আবহাওয়া দফতর সুত্রের খবর। আর সেই কারণে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে চরম সতর্কতা জারি হয়েছে গোটা সুন্দরবন জুড়ে। একদিকে যেমন মাইকিং করা হচ্ছে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে, তেমনি অন্যদিকে সুন্দরবনের নদী খাঁড়িতে মাছ ধরতে যাওয়ার উপর ও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। আর ঘূর্ণিঝড় হলে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রভাবে যাতে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীরা বিপদে না পড়েন সেই কারণে, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য দফতর। এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কেউ গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে তার লাইসেন্স ও বাতিল করা হতে পারে বলে মৎস্য দফতর এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি নদী তীরবর্তী মানুষজনকে সরে আসার জন্য ও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উপকূল এলাকা যেমন ঝড়খালি, গোসাবা,সুন্দরবন উপকূল সহ দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং এর মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে এলাকার মানুষজনকে। এছাড়া এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে প্রতিটি ব্লক ও মহকুমা স্তরে। সেখান থেকেই এই ঝড়ের গতি প্রকৃতি এবং সমগ্র এলাকার উপর নজরদারী রাখছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসন।

অন্যদিকে গোসাবা ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিশ্বনাথ চৌধুরী জানিয়েছেন ইতিমধ্যে দুর্বল নদী বাঁধ গুলির উপর কড়া নজরদারী করা হচ্ছে। সামনে ভরাকোটাল তাই যাতে কোনো রকমের দুর্ঘটনা না ঘটে সে দিকে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
উল্লেখ্য আয়লা,ফণি,বুলবুল,আম্ফান কিংবা ইয়াস এর স্মৃতি এখনো বর্তমান সুন্দরবনবাসীর মনে। ১৩ বছর আগের আয়লা কিংবা আম্ফান বা ইয়াস এর পুরাতন স্মৃতিকেই খানিকটা উস্কে দিল বলে মনে করছেন সুন্দরবনবাসী।বিগত দিনে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল সুন্দরবনে। গবাদি পশু থেকে শুরু করে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল প্রচুর ফসলের। বহু ভুটভুটি, লঞ্চ জলচ্ছাসে ডুবে গিয়েছিল। সেই কারণেই এবার যথেষ্ট সতর্ক প্রশাসন। অন্যদিকে এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সুন্দরবনে পর্যটকদের সুন্দরবনে যাওয়া আসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সমস্ত লঞ্চ গুলিকে কিনারায় উঠে আসার জন্য বলা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন এই সমস্ত জলযানের অনুমতি দেওয়া বন দফতরের তরফ থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here