জলপাইগুড়ি, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- কারো বাড়ি সুন্দরবন, কারো আবার চন্দন নগর, কেউ আবার জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ব্লকে বসবাসকারী। তবে শীতে তিস্তার জল চর ছেড়ে নদীর বুকে নেমে যেতেই এই পরিযায়ী কৃষকদের অস্থায়ী ঠিকানা হয়ে ওঠে রংধামালির অঞ্চলের দোধালিয়ার চর অঞ্চল। কারণ বর্ষায় তিস্তার জল বয়ে আনে উর্বর পলি মাটি। বিশাল এলাকা জুড়ে ফাঁকা পরে থাকা সেই উর্বর জমিতে চাষ আবাদ করতে আসেন জীবনকৃষ্ণ দাস।
ক্রান্তি ব্লকের আদি বাসিন্ধা তবে চাষের জমি নেই, তাই বছরের শীত কালটা তিস্তার চড়ে চাষ আবাদ করেই চলে জীবিকা। শুধু যে জীবনকৃষ্ণ তাই নয়, সুদূর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা থেকেও বহু পরিযায়ী কৃষক এই তিস্তার চড়ে ডেরা করে শীতের রকমারি ফসল ফলানোর জন্য। রীতিমতো পরিবার নিয়ে ধুধুপ্রান্তরে এই মুহূর্তে বসবাস করছে প্রায় চার হাজার মানুষ। উদ্দেশ্য একটাই তিস্তার উর্বর চড়ে মোটরসুটি, বিন্স, আলু, থেকে সিম উৎপাদন। এর সাথেই চলে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ, রয়েছে মোবাইল,
নদীর চড়ের মাঝ খানে এবার ডেরা গেড়েছে সুন্দরবন থেকে আসা অজিত সর্দার, নিজের ভাই ঘর ছেড়ে এত দূরে পেটের দায়ে পরে আছে, দাদার মন কি মানে, তাই পথ ঘাট জানা নেই তবুও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে সুন্দরবন থেকে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসা এক ব্যাক্তির মুখোমুখি হতেই বোঝা যায় কত দুর্গম পথ, পেরিয়ে পৌঁছতে হয়।
তিস্তা নদীর ওপারের ব্লক ক্রান্তি, সেই ক্রান্তির বাসিন্ধা হলেও কৃষি জমি না থাকায় নদীর এপারে চড়ে চলে আসেন এই উদ্যোমি যুবক, পুরো শীত কাল চাষ আবাদ করে আবার ফিরে যান নিজের বসতভিটায়। তিঁনিই জানালেন, তিস্তা নদীর এই চড়ে বর্তমানে প্রায় চার হাজার এমন মানুষ রয়েছে চাষ করছে, অনেকেই আছে সুন্দরবন, চন্দন নগর থেকে আগত। জমি উর্বর, ফলন ভালো হয়, তবে প্রতিটি রাত কাটে আতঙ্কে, কারণ মাঝে মধ্যেই হানা দেয় বুনো হাতির পাল। তবুও দাঁতেদাত চেপে গোটা শীতকাল ধরে চলে পরিযায়ী কৃষকদের এক অদৃশ্য সংগ্রাম।