ফের কোচবিহারে বিজেপিতে ভাঙন, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল যোগদান করলেন ১ বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য সহ ছয়টি পরিবার।

0
230

মনিরুল হক, কোচবিহার: ফের কোচবিহারে বিজেপিতে ভাঙন। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল যোগদান করলেন ১ বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য সহ ছয়টি পরিবার। এদিন কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা ২ নং ব্লকের উনিশবিসা অঞ্চলের পূর্ব পানিখাওয়া গ্রামের পাটাকামারি গ্রামের (১৪৮ নং বুথ) পঞ্চায়েত সদস্য পবিত্র প্রামানিক, বিজেপি নেতা কনক বর্মন, মাধব বর্মন, রাধাকান্ত বর্মন, মানিক বসুনিয়া সহ আরও বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা কর্মী তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করেন। এদিন তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। পরে তাদের উত্তরীয় পড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বরণ করেন নেন। এদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্র বৈদ, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কমলেশ অধিকারী সহ আরও অনেক।

বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেওয়ার পর বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য পবিত্র প্রামাণিক বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে উনিশবিসা অঞ্চলের পূর্ব পানিখাওয়া গ্রামের পাটাকামারি গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য আমি। আমি যেহেতু বিজেপি থেকে জয়ী হয়েছি। সেই অনুযায়ী আমাদের গ্রামে একটি ২৪ জনের গ্রাম কমিটি তৈরি করা হয়। সেখানে বুথ সভাপতি ৭- ৮ জনকে নিয়ে একটি গ্রুপ করে আমাকে নানা ভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করে। আমি বাকি ১৬ জনকে নিয়ে এলাকায় উন্নয়নের কাজ করি। কিন্তু সেই ৭-৮ জন বিজেপির নেতা কর্মীরা আমার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেই বিষয় নিয়ে উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়। কিন্তু তারা বারবার আশ্বাস দিয়ে যান। কিন্তু কোন লাভ হয় নি। তাই আমাদের গ্রুপের বেশিরভাগ কর্মীরা আমরা স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সাথে যোগাযোগ করি। সেই অনুযায়ী তারা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের সাথে কথা বলেন এবং সময় ঠিক করে আমাদেরকে জানিয়ে দেন সেই সময় অনুযায়ী আজ জেলা সভাপতির উপস্থিতিতে তার হাত দিয়ে আমরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলাম।

তিনি আরও বলেন, আমরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আজ আমরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলাম। কারণ দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বিজেপিতে থেকে এলাকার মানুষের কোন উন্নয়ন করতে পারি নি। আমাকে উন্নয়নের কাজ করতে দিত না বুথের সভাপতি ও অন্যান্য বিজেপি কর্মীরা। সেই কারণে এলাকার মানুষের যাতে ভালোভাবে উন্নয়ন করতে পারি সেই কারণে আজকে বিজেপি ছেড়ে বের কয়েকজন কে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যোগদান করলাম। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার পর আজ সত্যি খুব ভালো লাগছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাথাভাঙ্গা ২ নং ব্লকের উনিশবিসা অঞ্চলে ২০টি আসন ছিল। সেই ২০ টি আসনে লড়াই করে তৃণমূল কংগ্রেস ১৫ টি আসন দখল করেন। বাকি ৫ টি আসনে জয়লাভ করে বিজেপি প্রার্থীরা। সেই কারণে ওই অঞ্চল তৃণমূলের দখলে আসে। কিন্তু ১৯ এর লোকসভা ভোট কিছুটা পরিবর্তন হয়ে যায়। কিছু পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপিতে গেলেও ২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে ফের তারা তৃণমূলে ফিরে আসে। তারপর দীর্ঘদিন ধরে লড়াই সংগ্রাম করে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের দলকে শক্তিশালী করে তুলেছে ওই এলাকায়। তারপর আজ মাথাভাঙ্গা ২ নং ব্লকের উনিশবিসা অঞ্চলের পূর্ব পানিখাওয়া গ্রামের পাটাকামারি গ্রামের (১৪৮ নং বুথ) পঞ্চায়েত সদস্য পবিত্র প্রামানিক সহ ৬ টি পরিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। এই যোগদানের পর ওই অঞ্চলে তৃণমূল কংগ্রেসের আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

এদিন এবিষয়ে কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন,আজ মাথাভাঙ্গা ২ নং ব্লকের উনিশবিসা অঞ্চলের পূর্ব পানিখাওয়া গ্রামের ১৪৮ নং বুথের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য পবিত্র প্রামানিক বিজেপি নেতা কনক বর্মন, মাধব বর্মন, রাধাকান্ত বর্মন, মানিক বসুনিয়া ভারতীয় জনতা পার্টি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তারা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় ওই অঞ্চলে তৃণমূল কংগ্রেস কিছুটা শক্তিশালী বৃদ্ধি হলো বলে মনে করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here