আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভাটা পড়েছে পটুয়াদের পট শিল্পে।

0
244

আবদুল হাই, বাঁকুড়া:– পাহাড়ের কোল বেয়ে অলস অজগরের মতো কাঁচাপাকা রাস্তা ৷ আর সঙ্গে অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতা ৷ এই নিয়েই ভরতপুর গ্রাম । একদল সরল সাদাসিধে মানুষের বাস ৷ তাঁরা প্রায় সবাই পটশিল্পী ৷ এটাই তাঁদের জীবিকা ৷ গ্রামের প্রতিটি দেওয়াল যেন কথা বলে ওঠে ৷ শিল্পের কথা ৷ কারুকাজের কথা ৷ তবে সেই শিল্পীরাই এখন অতিমারির কোপে সহায়-সম্বলহীন, উপার্জনহীন।

বাংলার কোনায় কোনায় নানা শিল্প ছড়িয়ে রয়েছে ৷ তবে কদর না পেয়ে অনেক শিল্প আবার কালচক্রে হারাতেও বসেছে । এরইমধ্যে সংকটের মুখে বাংলার পটচিত্র শিল্প ৷ সুপারসনিক যুগ এবং আধুনিকতার ছোঁয়া কেড়ে নিয়েছে তাঁদের রুজি রোজগার ৷ মাথায় হাত পড়েছে ভরতপুর পট-পাড়ার মানুষগুলোর ৷ একটা সময় ছিল, যখন তপন চিত্রকর, বন্দনা চিত্রকররা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে পটচিত্রের উপর কৃষ্ণলীলা, মনসামঙ্গল দেখিয়ে বা এই শিল্পকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ভিক্ষে করে পেটের ভাত জোগাতেন । কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে সেটুকুতেও এখন ভাঁটা পড়েছে ।

দেশে অতিমারি আসার পর থেকে বিভিন্ন জনপদ, শহর ও মফস্বল এখন সন্ত্রস্ত ৷ তারই জেরে জীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে পটপাড়ার ষোলটি পরিবারের ৷ তপন, বন্দনা, অনিল চিত্রকররা আর তাঁদের শিল্প নিয়ে যেতে পারেন না গ্রামে গ্রামে ৷ নিজের কুটিরে বসেই দিন কেটে যায় ৷ অভাব যেন তাঁদের পটগান গাইতে ভুলিয়ে দিয়েছে ৷ পেটের ভাতটুকুও না-পেয়ে হারিয়ে যাচ্ছে তাঁদের শিল্পীসত্ত্বা ।

একচালা বাড়িতে বাস করা অসহায় মানুষগুলি এখন তাকিয়ে প্রশাসনের দিকে ৷ শিল্প থাক, আপাতত দু বেলা দু মুঠো খেতে পাওয়াই তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here