আলোর উৎসবে মাতোয়ারা যখন গোটা বাংলা তখনই বাধ্যকতার উৎসব পালনে মাতোয়ারা দিপালী, দুর্গা, আরতি, মঙ্গলা, মালতি সহ ৫০ ঊর্ধ্ব একাধিক নিপীড়িত অসহায় দুস্থ মানুষেরা।

0
406

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:– আলোর উৎসবে মাতোয়ারা যখন গোটা বাংলা তখনই বাধ্যকতার উৎসব পালনে মাতোয়ারা দিপালী, দুর্গা, আরতি, মঙ্গলা, মালতি সহ ৫০ ঊর্ধ্ব একাধিক নিপীড়িত অসহায় দুস্থ মানুষেরা। রাত তখনও ১০ টার কাছাকাছি। হাত উঁচিয়ে সাহায্য প্রার্থনার আশায় মন্দিরের সিঁড়িতে বসে বেশ কয়েক জন মহিলা ও পুরুষ। এরা কেউই ভিখিরি নয় তবে বাস্তবের অবহেলা আর পরিস্থিতি তাদের কে আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। ঢাক ঢোল ব্যান্ড সহযোগে যখন হাজারো হাজারো মানুষের ভিড় মন্দির মুখি তখনই সারা দিনই দুমুঠো অন্নের জোগান দিতে পুজোর দিন গুলিতে মন্দিরের সামনে এসে হাজির হয় এই মানুষ গুলো। কেউ সাহায্য করেন আবার কেউ না করেই চলে যায় কিন্তু তাতে কি পেটের ক্ষুধা মেটাতে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের পরও সাহায্য প্রার্থনায় কোনো রকম খামতি রাখেন না তাঁরা। তাঁদের কথায় মানুষ যখন আনন্দে মাতোয়ারা হয় তখন তারাও আনন্দে শামিল হয় তবে বাধকতার সাহায্য প্রার্থনা থাকে তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
cash Study
দুর্গা পাল, তমলুকের কেশবপুরের বাসিন্দা স্বামী অসুস্থ ছেলে পাগল বাস্তব পরিস্থিতিকে মাথায় নিয়ে কালীপুজোর রাতে হাজির হন তমলুকের বর্গভীমা মন্দিরের সিঁড়ির সামনে পরিবার বাঁচাতে সাহায্যের প্রার্থনা উৎসবে মাতোয়ারা সাধারণের কাছে। উৎসবের দিন গুলোতে যেটুকু সাহায্য পান তা দিয়ে কোনোক্রমে আলুসেদ্ধ ভাত খাইয়ে পরিবারকে সান্ত্বনা দেন পঞ্চাশোর্ধ এই মহিলা।
আরতি মিদ্যা তমলুকের বাসিন্দা, বাবা মা মারা যাওয়ার পর বিয়েই করা হয়নি তাঁর বর্তমানে দিদির কাছে থাকেন। কিন্তু তাতে কি নিজের খোরাক পোশাক জোগান করতেই হবে তাকে। পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব এই মহিলা তাই কালীপুজোর দিন মন্দিরের সামনে হাজির হয় সাহায্য প্রার্থনার জন্য। দীপালি ভুঁইয়া বয়স প্রায় পঞ্চান্ন, স্বামী দেখে না তাই নিজের খরচ নিজে চালাতে উৎসবের দিন গুলিতে হাজির হয় এই মন্দিরের সামনে তবে যেটুকু পায় সেটুকুতেই খুশি হয়ে কোনো ক্রমে খাবারটা জোগাড় করে নেন এই মহিলা। এরকম আরও অনেক অসহায় নিপীড়িত মহিলা যারা উৎসবের দিন গুলিতে ভিড় করেন মন্দির প্রাঙ্গণ জুড়ে এবং আনন্দে মাতোয়ারা মানুষের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন তাঁদের সংসারে থাকা মানুষ গুলোর মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে। আলোর উৎসবে গভীর যন্ত্রণা লুকিয়ে পরিবার সংসার প্রতি তাদেরই বাধ্যকতা এবং সমবেদনা সত্যিই প্রশংসনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here